ফসলে রোগ ও পোকার আক্রমণ হলে প্রথমেই কীটনাশকের দিকে ছুটতে চাই। চাই এমন একটা বিষ যা দিলাম আর সব পোকা শেষ। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি এর ফলাফল কি? এই সচেতনতার অভাবে প্রতি নিয়ত নিয়ম না মেনে বালাইনাশক ব্যবহার করে চলেছে এ দেশের কৃষক। এতে একদিকে খাদ্য থাকছেনা নিরাপদ সেই সাথে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ। মাঝে মাঝে অভিযোগ বিষে কাজ হচ্ছেনা। আসুন একটু পিছনে ফিরে দেখি কিছু ভুল করলাম কিনা-
১। কি বিষ দিলাম? যে বালাইনাশক স্প্রে করলাম বা প্রয়োগ করলাম তা কি সঠিক ছিল?
২। কতটুকু দিলাম? ডোজ কি সঠিক ছিল? লেভেল অনুসরণ করেছি কি?
৩। পানির পরিমাণ সঠিক ছিল? পানি কি পরিস্কার ছিল?
৪। কখন স্প্রে করেছি? সময় কি ঠিক ছিল?
৫। নজেল কি ঠিক ছিল?
৬। কোথায় স্প্রে করেছি? কাক্ষিত স্থানে বালাইনাশক পৌছেছে কি?
এবার আসুন উত্তর গুলো নিচের তথ্যের সাথে যাচাই করি
** প্রতিটি রোগ ও পোকার জন্য ভিন্ন ভিন্ন বালাইনাশক অনুমোদন করা হয়। বালাইনাশক কেনার পূর্বে যাচাই করে নিন এটি সঠিক কিনা। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিন। অথবা ৩৩৩১ এ কল করে জেনে নিন। মেয়াদ উত্তীর্ণ বালাইনাশক ক্রয় করবেননা।
** বালাইনাশক কখনই নির্ধারিত মাত্রার কম বা বেশি প্রয়োগ করা যাবে না। জমির পরিমান এর সাথে হিসাব মিলিয়ে নিন। জৈব বালাইনাশককে ব্যবহার করুন।
** শতক প্রতি ২ লিটার পানিতে বালাইনাশক মিশাতে হবে। মনে রাখবেন বালাইনাশকের সাথে পানির পরিমাণ কম বা বেশি হলে মিশ্রণের ঘনমাত্রা পরিবর্তন হয়, যা সঠিকভাবে বালাই দমন করতে অক্ষম। পানি অবশ্যই স্বচ্ছ ও পরিস্কার হতে হবে। মাটি বা কাদা মিশ্রিত পানিতে বালাইনাশক মিশালে এর কার্যকারিতা কমে যায়।
** বালাইনাশক স্প্রে করার সঠিক সময় হলো বিকেলবেলা। সকালে স্প্রে করলে উপকারী পোকা মারা যায় বেশি এবং ফুল অবস্থায় পরাগায়নে ক্ষতি হয়।
** বালাইনাশক স্প্রে করার পূর্বে মেশিনটি যাচাই করতে হবে, নজেল ত্রুটিপূর্ণ কিনা। স্প্রে করাকালে পানি যেন টপটপ করে না পরে তা লক্ষ রাখতে হবে।
** বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে কাক্ষিত স্থানে। পোকা যদি গাছের গোড়ায় থাকে তবে উপরে উপরে স্প্রে করে লাভ নেই।
** কখনই ঝড়ো আবহাওয়ায় স্প্রে করবেননা।
** স্প্রে করার জন্য ব্যবহৃত সামগ্রী পরিস্কার করে রাখুন। স্প্রে করার সময় শরীর যেন অনাবৃত না থাকে তা লক্ষ করুন। স্প্রে কালীন সময় কিছু খাবেননা বা পান করবেননা।
আপনার, আমার একটু সচেতনতা পারে উৎপাদন খরচ কমাতে ও নিরাপদ ফসল ঘরে দিতে।
উত্তর সমূহ